বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪

চেয়ো না সুনয়না আর নয়ন পানে



সুনয়না দাঁড়িয়ে আছে দেয়ালে হেলান দিয়ে। পিঠ আর একটি পা হাঁটু ভেঙ্গে দেয়ালের সাথে লাগিয়ে এক পায়ে দাঁড়িয়ে আছে সে। কাঁধে একটি ব্যাগ প্রায় কোমর পর্যন্ত নেমে এসেছে। হাতে একটি স্মার্টফোন যা হেডফোনের সাহায্যে দুই কানের সাথে সংযুক্ত। দৃষ্টি তার ফোনের স্ক্রিনের দিকে। একমনে কীপ্যাডে আঙ্গুল চালাচ্ছে। আজকরে আগে তাকে কখনও ওয়েস্টার্ন পোশাকে দেখি নি। লম্বা টপ্স্ আর জিন্সে আজকে তাকে মনে হচ্ছে ‘স্কুল গার্ল’, কোচিংয়ে এসেছে। অথচ রীতিমত প্রকৌশল বিদ্যা রপ্ত করা শেষ করে একটি বাণিজ্যিক ব্যাংকে জব করছে তিন বছর। ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করে আজকাল অনেক ছেলেমেয়েই ব্যাংক জব করছে। আইবিএ’র ইভিনিং এমবিএতে সুনয়না আমার ক্লাশমেট।


ওর আসল নাম মারিয়াম। আজকাল এই নামে এমন আধুনিক সুন্দরী মেয়ে আর আছে নাকি আমি জানি না। আমার কেবলই মনে হয় এই মেয়ের এই নাম মানায় না। কেমন যেন ক্ষেত ক্ষেত নাম। যাইহোক আমি তাকে সুনয়না ডাকি অন্য কারণে। সে আমার চোখের দিকে তাকালে আমার ভিতরটা জানি কেমন করে উঠে। আমি এটা বলে বোঝাতে পারব না। তখন আমার মাথার ভিতর বাজতে থাকে কবি নজরুলের একটি গানের সুর “চেয়ো না সুনয়না এই নয়ন পানে।” মারিয়াম অবশ্য জানে না এই কথা। মাত্র তো কয়েক মাসের পরিচয়। আমিও আছি অন্য আরেকটা ব্যাংকে। একই পেশার কারনে কিনা জানি না সুনয়না মানে মারিয়াম আমার সাথে এমনভাবে মিশে যেন অনেক দিনের পরিচয়। 


অফিস থেকে বের হয়ে যত দ্রত সম্ভব আসতে চেষ্টা করি। তারপরও মাঝে মাঝে দেরী হয়ে যায়। আজও ভাবছিলাম ক্লাশে দেরী হয়ে যাবে। সুনয়না এসএমএস দিয়েছিল, ‘তুমি কই?’ আমি রিপ্লাই না দিয়ে বাইকের গতি বাড়াতে চেষ্টা করেছি। যে বিল্ডিংটায় আমাদের ক্লাশ হয় সেখনে পৌঁছে সুনয়নাকে এভাবে দাড়িয়ে থাকতে দেখলাম। একটানে বাইক নিয়ে চলে গেলাম পিছন দিকটায় বাইকটা রাখার জন্য। স্টার্ট বন্ধ করে নেমে এলাম। তারপর লক করে চাবিটা পকেটে রেখে পেছন ফিরেই দেখি সুনয়না দাঁড়িয়ে আছে। মুখে সেই মন ভালো করে দেওয়া হাসি আর চোখে সেই হরিণীর মত দৃষ্টি। 

আমি বললাম, ‘এই তুমি এইভাবে আমার দিকে তাকিও না তো।’

আমার কথায় সে আরও হাসে। বলে, ‘এখানে আমার করার কী আছে। আমি তো স্বাভবিকভাবেই তাকাই।’

তারপর বলে, ‘চল, চা খেয়ে আসি। স্যার ক্যাপ্টেনের মোবাইলে এসএমএস দিয়েছে আসতে আধা ঘন্টা দেরী হবে। ’ 

হাঁটতে হাঁটতে আমরা চলে গেলাম কেন্দ্রিয় লাইব্রেরীর সামনে। চার দোকানটার সামনে বেশ ভির। একটু দূরে তাকে বললাম ‘দাঁড়াও, আমি চা নিয়ে আসছি।’ 

চা নিয়ে ফিরে আসতেই সরাসরি তার চোখে আমার জোখ পড়ল । সেই প্রলয়ংঙ্করী দৃষ্টি। ভিতরটা আমার ফাঁকা ফাঁকা লাগছে। আর মাথার ভিতর বাজছে সেই সুর ‘চেয়ো না সুনয়না এই নয়ন পানে ’

রবিবার, ৯ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪

পদ্য ব্লগ ....................৫

আউলা আমার মনটা এমন
সংসার ভাল লাগে না 
গৃহ বন্দী বাউলা আমি
মন যে গৃহে টিকে না। 

এসংসারে সবকিছু ভাই
টাকার মাপে হয়
বলবে তুমি ভালবাসা
সেও বাকী নয়।

টাকায় আমার মনগলে না
ভালবাসা চাই
এমন আজ ভালবাস
কোথায় বল পাই।

রবিবার, ২ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪

আমরা এখন এক নম্বর


আমরা এখন এক নম্বর 
হইছে মাথা উঁচা
হিংসা করে কেউ যদিও 
দিবে কথার খোঁচা।

ঢাকা এখন বাসযোগ্য নয় 
যাবা তুমি কই?
বলব আমি এবিষয়ে 
আমরা একা নই। 

আমরা কেবল এক নম্বর
এটা মোদের গর্ব
এ বিষয়ে মান সম্মান 
করবে না কেউ খর্ব।

শনিবার, ১ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪

আমাদের গণতন্ত্র

গণতন্ত্র মানে তাল গাছটা আমার
গণতন্ত্র মানে ওটা আমারই থাকতে হবে।
গণতন্ত্র মানে আসেন, বসেন, আলোচনা করেন
কীভাবে তালগাছটা আমাকেই দিয়ে দেয়া যায়।

গণতন্ত্র মানে ক্ষমতা যে কত্তো মজা
খালি খাওন আর খাওন।
গণতন্ত্রের আয়োজন খালি খাওন আর খাওন
খাওন আর খাওন, খাওন আর খাওন।

তোমাদের এই গণতন্ত্রে আমাদের সর্বনাশ
যতদিন তোমাদের হাতে দেশ, পথ খুঁজে পাবে না বাংলাদেশ।

আমরা প্রথম হয়েছি



সর্বনিম্ন ৩৮ দশমিক ৭ পয়েন্ট পেয়ে সবচেয়ে অযোগ্য শহর হিসেবে বিবেচিত হয়েছে ঢাকা। এরপর আছে প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপ দেশ পাপুয়া নিউগিনির পোর্ট মোরেসবাই শহর। এই শহরটি পেয়েছে ৩৯ দশমিক ৯ পয়েন্ট।
এরপর পর্যায়ক্রমে আছে নাইজেরিয়ার লাগোস (৩৯), জিম্বাবুয়ের হারারে (৩৯.৪), আলজেরিয়ার আলজিয়ার্স (৪০.৯), পাকিস্তানের করাচি (৪০.৯), লিবিয়ার ত্রিপোলি (৪২.৮), ক্যামেরুনের দৌয়ালা (৪৩.৩), ইরানের তেহরান (৪৫.৮) ও আইভরি কোস্টের আবিদজান (৪৫.৯) শহর।

ঢাকায় অনেক মাঠ ছিল, খাল ছিল, বুড়ি গঙ্গায় গোছল করার ঘাট ছিল। আশে পাশের মাঠগুলোতে আমরা খেলতাম। কিন্তু আমার বাচ্চাদের খেলার কোনো মাঠ অবশিষ্ট নেই। সব খেয়ে ফেলেছে। বুড়িগঙ্গার পানিতে দূষণ শুরু হয়ে গেলও তখনও বর্ষাকালে পানি ভালো থাকতো। কয়েকটি ঘাট ছিল যেখানে আমরা বর্ষাকালে গোছল করতাম। বর্ষাকালে এটা ছিল আমাদের একটা বাড়তি আনন্দ। অনেকে সারা বছরই সেখানে গোছল করতো।


কিন্তু গত বিয়াল্লিশ বছরে যাদের এই শহর নিয়ে পরিকল্পনা করার কথা ছিল তারা করে নাই। তারা খালি খাইছে। আর আমাদেরকে বলছে গরীব দেশ যতটুক পারি করছি। আমাদের দেশ গরীব থাকলেও তারা কিন্তু গরীব নাই। আমরা ট্যাক্স দিয়েছি আর ওনার কেবল খাইছেন।


মাঠ, ঘাট, খাল নালা সবই খেয়েছ। একে মনের সখ মিটিয়ে খেয়েছ । তবে একটা জিনিস আমার কাছে খুব আরামদায়ক লাগতেছে। সেটা হল আমি ভেবেছিলাম কেবল ঢাকা-ই একমাত্র বসবাসের অযোগ্য। এখন দেখছি আরও আছে।আমার কেবল সবার মধ্যে প্রথম হয়েছি এই আরকি।